হাদীস পড়ি – জীবন গড়ি ::::: এপ্রিল – ‘১২

প্রতিবেশীদের হক এবং

তাদের প্রতি কর্তব্য

 

মাওলানা আতিকুর রহমান ভূঁইয়া

 

প্র্রতিবেশীদের হকের গুরুত্ব

হাদীস – ১ : উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়িশা (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন –  “জিবরাঈল (আ.) প্রতিনিয়তই আমাকে প্রতিবেশীর হক সম্পর্কে তাকীদ দিচ্ছিলেন। এমনকি আমার ধারণা জন্মেছিল –  হয়ত প্রতিবেশীকে সম্পত্তিতে ওয়ারিস করে দিবেন।”

(বুখারী ও মুসলিম)

হাদীস –  ২ : হযরত উকবা ইবনে আমের (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, “কিয়ামতের দিন যে দু’ব্যক্তির মামলা সর্বপ্রথম পেশ করা হবে, তারা হলো দু’জন প্রতিবেশী।”

(মিশকাত)

 

সৎ প্র্রতিবেশী সৌভাগ্যের প্রতীক

হাদীস  –   ৩ : হযরত নাফে (রা.) নবী কারীম (সা.) হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেন –  “তিনটি জিনিস মুসলমানের সৌভাগ্যের অন্তর্ভুক্ত : (১) প্রশস্ত বাসস্থান, (২) সৎ প্রতিবেশী ও (৩) উত্তম বাহন।

(আল-আদাবুল মুফরাদ)

প্র্রতিবেশীরা ভাল-মন্দের সাক্ষী

হাদীস –  ৪ : হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) হতে বর্ণিত, এক ব্যক্তি নবী কারীম (সা.) – এর নিকট আরজ করলেন, “হে আল্লাহর রাসূল! আমি ভালো করছি, না মন্দ করছি –  তা আমি কী করে জানবো?” নবী কারীম (সা.) বললেন –  “যখন তোমার প্রতিবেশীদের বলতে শুনবে যে, তুমি ভালো করছো, তবে মনে করবে –   প্রকৃতই তুমি ভালো করছো। আর যখন প্রতিবেশী বলবে –  তুমি মন্দ করছো, তবে মনে করবে –  ঠিকই তুমি মন্দ কাজ করছো।”

(ইবনে মাজা)

 

প্র্রতিবেশীদের হকের গুরুত্ব

হাদীস –  ৫ : হযরত আবু হুরাইরা (রা.) হতে বর্ণিত, একদা রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, “আমি আল্লাহর কসম করে বলছি, সে লোকটি কিছুতেই ঈমানদার নয়। আমি আল্লাহর কসম করে বলছি, সে লোকটি কিছুতেই ঈমানদার নয়। আমি আল্লাহর কসম করে বলছি, সে লোকটি কিছুতেই ঈমানদার নয়।” জিজ্ঞাসা করা হলো, হে আল্লাহর রাসূল (সা.)! (এমন হতভাগ্য) লোকটি কে? রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, “যার অনিষ্ট হতে তার প্রতিবেশী নিরাপদ থাকে না।”

(বুখারী ও মুসলিম)

হাদীস –  ৬ : হযরত আবু হুরাইরা (রা.) হতে বর্ণিত, একজন লোক রাসূলুল্লাহ (সা.) – এর নিকট এসে নিবেদন করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! অমুক মহিলা অধিক নফল নামায, অধিক নফল রোযা ও অধিক দান – খাইরাতের জন্যে বিখ্যাত, কিন্তু সে তার প্রতিবেশীদেরকে জিহ্বা দ্বারা কষ্ট দেয়। রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, “সে জাহান্নামী।” লোকটি আবার আরজ করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! অমুক মহিলা সম্পর্কে বলা হয়ে থাকে যে, সে (জরুরী আমল করার পর) নফল নামায কম পড়ে, নফল রোযা কম রাখে এবং কম দান করে, কিন্তু মুখের ভাষা দিয়ে কোনো প্রতিবেশীকে কষ্ট দেয় না। রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন “সে জান্নাতী।”

(মিশকাত)

 

প্র্রতিবেশীদের খোঁজখবর নিতে হবে

হাদীস –  ৭ : হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.)কে এ কথা বলতে শুনেছি, “যে ব্যক্তি তৃপ্তিসহকারে পেট পুরে ভক্ষণ করে, আর তার – ই পার্শ্বে তার প্রতিবেশী ক্ষুধার্ত থাকে, সে ঈমানদার নয়।”

(বাইহাকী)

প্র্রতিবেশীদেরকে হাদিয়া প্রদান করবে

হাদীস –  ৮ : হযরত আবু যার (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, “যখন তুমি তরকারী পাকাবে, তখন তাতে কিছু অতিরিক্ত পানি দিবে এবং এর মাধ্যমে তোমার প্রতিবেশীর তদারকী করবে।”

(মুসলিম)

হাদীস –  ৯ : হযরত আবু হুরাইরা (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, “হে মুসলিম রমণীরা! তোমরা প্রতিবেশীর বাড়ীতে সামান্য বস্তু পাঠানোকে তুচ্ছ মনে করবে না। এমনকি তা যদি বকরীর পায়ের সামান্য অংশও হয়।”

(বুখারী ও মুসলিম)

 

অধিক নিকটবর্তী প্রতিবেশী অধিক হকদার

হাদীস –  ১০ : হযরত আয়িশা (রা.) হতে বর্ণিত, একদা তিনি রাসূলুল্লাহ (সা.)কে জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল (সা.)! আমার দু’জন প্রতিবেশী আছে, এর মধ্য হতে কাকে আমি হাদিয়া প্রেরণের ব্যাপারে প্রাধান্য দিব? রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, “দরজার দিক দিয়ে যে তোমার বেশী নিকটবর্তী।”

(বুখারী)

Related posts

One Thought to “হাদীস পড়ি – জীবন গড়ি ::::: এপ্রিল – ‘১২

  1. Md tanvir

    Thanks for Wedsit.

Leave a Comment